তোমরা যারা গণিত নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে পছন্দ করো তারা হয়ত রামানুজন ও হার্ডির কথা শুনেছ। দুজনেই ছিলেন খুব ভালো বন্ধু এবং রামানুজনের পরিচিতি পাওয়ার পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল। কারণ রামানুজন তার আবিষ্কৃত বিভিন্ন উপপাদ্য ও গাণিতিক তত্ত্বগুলো তার কাছেই সর্ব প্রথম পাঠিয়েছিলেন। রামানুজন ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত ভারতীয় গণিতবিদ ও আধুনিক সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদদের মধ্যে একজন আর হার্ডি ছিলেন একজন ইংরেজ গণিতবিদ। তারা দুজনে মিলে সংখ্যাতত্ত্বের উপর অনেক কাজ করেছেন। তারই একটা (এবং মজার ঘটনা) “হার্ডি – রামানুজন সংখ্যা” নিয়ে আজকে আলোচনা করব।

রামানুজন যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে একবার পাটনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রামানুজন তখন খুবই অসুস্থ। হার্ডি তার খোঁজখবর নিতে একবার হাসপাতালে গেলেন। তিনি রামানুজনকে বললেন,
“আমি যে ট্যাক্সিতে উঠেছিলাম তার নম্বর টা ছিল ১৭২৯। আমার কাছে খুবই বোরিং একটা সংখ্যা এটা”
এটা শুনে রামানুজন তখনই প্রতিবাদ করে বসলেন। বললেন, “এ আপনি কি বলিতেছেন হার্ডি সাহেব? এটা তো খুবই একটা মজার সংখ্যা“ (এটা আমি অনুমান করে বললাম, হয়ত এভাবেই প্রতিবাদ করেছিলেন রামানুজন)। রামানুজন চালিয়ে গেলেন তার বক্তৃতা, “এটি হলো সেই সবচেয়ে ছোট সংখ্যা যাকে দুটি সংখ্যার ঘন এর সমষ্টি রুপে দুইভাবে প্রকাশ করা যায়”। মানে হলো –
1^3+12^3 = 1729 \\9^3+10^3 = 1729
১৭২৯ এর আগে এমন কোনো সংখ্যা নেই যেই সংখ্যাকে এরকম দুইটি ঘনের যোগফল আকারে দুইটি ভিন্নভাবে লেখা যায়।
মূলত এভাবেই এর সূত্রপাত হয়। তবে এই সংখ্যার আরো কিছু মজাদার বৈশিষ্ট্য আছে অর্থাৎ ১৩ এর সাথে খুব নিবিড় সম্পর্ক আছে যেমনটা থাকে দুইজন ভালো বন্ধুর মধ্যে!
1^3+12^3 = 1729
এখানে ১২ ও ১ এর যোগফল ১৩। আবার পর পর তিনটি মৌলিক সংখ্যা ৭,১৩ ও১৯ এর গুণফল ( ৭×১৩×১৯)=১৭২৯ যার মধ্যে একটি সংখ্যা হলো ১৩। আবার এদের গড়ও ১৩ ( ৭+১৩+১৯)÷৩=১৩। তবে তিনি ধনাত্মক সংখ্যা বিবেচনা করে বলেছেন, তবে ঋণাত্মক সংখ্যায় বিবেচনা করলে ৯১ হলো ক্ষুদ্রতম সংখ্যা যাকে ২ ভাবে ঘন এর সমষ্টি আকারে দেখা যায় তা হলো-
6^3+(-5)^3=91 \\4^3+3^3 = 91
আরো একটি মজার তথ্য জানিয়ে রাখি (প্রফেসর গুগল থেকে জানতে পারলাম) যে সংখ্যাকে দুটি উপায়ে দুইটি সংখ্যার ঘন–এর যোগফল আকারে লেখা যায় তাকে “রামানুজন সংখ্যা” বলে! বোঝায় যাচ্ছে ১৭২৯ আসলেই একটি মজার সংখ্যা।