Skip to content

Tachyon

বাংলায় বিজ্ঞান গবেষণায় প্রথম উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম

অস্তিত্ব নেই যে বিজ্ঞানীর

camilla-nous

লেখক : কে. এম. শরীয়াত উল্লাহ

গতবছর একটি গবেষণাপ্রবন্ধ বের হয় যার লেখক ছিলেন Camille Noûs নামের একজন ফরাসি বিজ্ঞানী। সেটিই ছিল তার লেখা প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ। তবে বিজ্ঞানীরা নতুন এই গবেষকের কাজে খুব বিস্মিত হতে থাকেন। কেননা ২০২১ এর শুরু পর্যন্ত এই গবেষক প্রায় ১৮০ টা গবেষণাপ্রবন্ধ লিখে ফেলেছেন। এই গবেষণা প্রবন্ধের মধ্যে অনেকগুলো আবার নামকরা জার্নালেও ছাপানো হয়েছে। একজন বিজ্ঞানী কীভাবে এতো কম সময়ে এতো বেশি গবেষণা প্রবন্ধ লিখে ফেললেন?

এ থেকেই এই লেখকের প্রতি সন্দেহ জন্মায় কিছু জার্নালের সম্পাদকদের। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এই লেখকের কাজ কারবারের খোঁজ নিতে। তবে তদন্তে জানা যায়, এই নামে আসলে কোনো গবেষকই নেই। তাহলে কে বা কারা ছাপিয়েছে এ গবেষণাপ্রবন্ধগুলো?

আরো তদন্ত করা হয়। অবশেষে জানা যায়, Camille Noûs আসলে কোনো একজন ব্যক্তি না। এটি বিজ্ঞানীদের একটি দল। তাদের ভাষ্যমতে,

গবেষণাপ্রবন্ধে গুটিকয়েক বিজ্ঞানীর নাম দিলে বিজ্ঞান ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে যায়। কিন্তু বিজ্ঞান মোটেও গুটিকয়েক ব্যক্তির জিনিস না। এটা অবজেক্টিভ জিনিস। একটি নির্দিষ্ট গবেষণাপত্রকে অনেকবার উদ্ধৃত করা হলে শুধু সেই লেখকেরই জনপ্রিয়তা বাড়বে, কিন্তু তিনি রেফারেন্সে যেসকল গবেষণাপত্র দিয়েছেন তাদের জনপ্রিয়তা বাড়বে না। এতে বিজ্ঞানের মূল ভিত্তি, বিজ্ঞানীরা একটি দল হিসেবে কাজ করবে, ভেঙ্গে পড়ে ও বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানে না থেকে জনপ্রিয়তায় মগ্ন হয়ে পড়েন।

অন্যদিকে বায়োএথিসিস্ট লিসা রাসমুজেন বলেন,

এভাবে কাজ করা নৈতিকতা বিরোধী। এতে নিজের ভুল কাজের খেসারত আর কেউ বইতে চাইবে না। সেই দায়ভার নেওয়ার মতোও আর কেউ থাকবে না।

Camille Noûs শব্দের ফার্স্ট নেমটি একটি জেন্ডার নিউট্রাল ফ্রেঞ্চ শব্দ। আর লাস্ট নেমটি গ্রিক শব্দ νοῦς থেকে নেওয়া যার অর্থ ‘কারণ’। মূলত যারা এই নামটি ব্যবহার করছে তারা বর্তমান বিজ্ঞানীদের এই সাবজেক্টিভ চিন্তা ধারা পরিবর্তন করতেই এমন নাম রেখেছে। তারা কিছুদিন পূর্বে একটি ম্যানিফেস্টো প্রকাশ করে যেখানে তারা বলে,

আমি সক্রেটিসের গুরু ছিলাম ও হাইপেশিয়ার ছাত্র ছিলাম। আপেল কেন মাটিতে পড়ে, চাঁদ কেন পড়ে না, তা নিউটন ভাবার অনেক আগেই আমি ভেবেছিলাম। আমি ছিলাম লাভোইসিয়েরের অর্ধাঙ্গীনি এবং ডারউইনের জাহাজের সঙ্গী, জিওনার্দো ব্রুনোর বইয়ের প্রকাশকও আমি। কারিসের সহকারী, হার্ডির সহযোগী এবং লিবনিজের প্রতিদ্বন্দ্বীও আমি, আইনস্টাইনের বিরোধী এবং হবসের শিষ্যও আমি, ফ্রয়েডের রোগী এবং আরেন্ডের চিঠির বন্ধুও আমি। আমি নামহীন রিভিওয়ার যে আপনার কাজ পড়েছে এবং একটি নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছে ও আপনার এ সিস্টেমকে নতুনভাবে গঠন করার চিন্তা করতে বলছে।

নাম না জানা গবেষক বিজ্ঞানের জগতে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ফরাসি গণিতবিদদের একটি দল নিকোলাস বোরবাকি নাম দিয়ে গণিতের জগতে বিপ্লব গঠনকারী কিছু নতুন গবেষণা ও বই প্রকাশ করে। পরিবর্তীতে জানা যায় এই নামে আসলে কোনো গণিতবিদ নেই।

2 comments on “অস্তিত্ব নেই যে বিজ্ঞানীর”

  1. Lavoisier এর বাংলা বানান ল্যাঁভয়সিয়ে। উচ্চারণ অনুযায়ী বাংলা বানানটি এমনই হওয়া উচিত। বিজ্ঞানী জিওদার্নো ব্রুনোর নামটিও ঠিকভাবে লেখা হয়নি।ভাষাগত কয়েকটা সমস্যা বাদ দিলে প্রবন্ধটা ভালোই হয়েছে। এ ধরনের ইন্টারেস্টিং বিষয় নিয়ে আরো প্রবন্ধ চাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।